লেখনীর শেষ প্রান্তে |bagla golpo | bangla story | bangla love story | romantic story

লেখনীর শেষ প্রান্তে
     -তুমি কী বিয়ের পর আমাকে মারবে?\n
-আজব, তোমাকে মারব কেন?\n
-কত ঝগড়া হয়। রাগের মাথায় যদি আমাকে মারো তাহলে তো সেখানে আমার পরিবারের কেউ দেখবে নাা।\
লেখনীর শেষ প্রান্তে |bagla golpo | bangla story | bangla love story | romantic story


-না, তোমাকে মারব না। বেশি রাগ উঠে গেলে গালে ঠোকর দেব।\n

উপরের কথোপকথন প্রেমিক প্রেমিকার। মেয়েটির মনে ভয়, সে সবাইকে ছেড়ে শ্বশুর বাড়ি যাবে। সেখানে তো তার বাবার বাড়ির কেউ থাকবে না। ঝগড়া বশত বা রাগারাগি হলে মেয়েটি তো অসহায়। সেজন্যই তার মনে এত ভয়।
\n\n
এক মেয়ে আমাকে ধাঁ ধাঁ দিল। “একটি মেয়ে বাবার বাড়ি ছেড়ে শ্বশুর বাড়ি গেল। বাবা ছাড়ল, শ্বশুরকে বাবা হিসেবে পেল। মা ছাড়ল, শ্বাশুড়ী পেল। বোন ছাড়ল, ননদ পেল। ভাই ছাড়ল, দেবর পেল। কিন্তু কাকে ছেড়ে আসল যার কারণে স্বামী পেল?”
\n\n
আমি উত্তর দিলাম, প্রেমিক। মেয়েটি নিশ্চয় প্রেম করত। সে প্রেমিক হারাল স্বামী পেল।\n
মেয়েটি বলল,”এমন অগনিত মেয়ে আছে যারা প্রেম করেনা। শুধুমাত্র স্বামীর জন্যই অপেক্ষা করে। কোন কিছু হারানোর বিনিময়ে স্বামী পেতে হয় না। স্বামী প্রতিটি মেয়ের প্রাপ্য। তার দীর্ঘ দিবস রজনীর অপেক্ষিত সময়ের ফল।”
\n\n
একটি মেয়ে লাল বেনারশি শাড়ি পরে শ্বশুর বাড়ি অনেক আশা নিয়ে আসে। সারাটি জীবন যেন এই বাড়িতে কাটিয়ে সাদা কাপড় পরে লাশ হয়ে শেষ বিদায়টা যেন শ্বশুর বাড়ি থেকেই হয়। শ্বশুর শ্বাশুড়ী যেন নিজের মেয়ের মত আদর করে। ননদ আর দেবর যেন নিজের বোনের মত মনে করে। এটাই তো চাওয়া একজন আদর্শ নারীর।
তবুও একটি মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে একটা চাপা ভয় নিয়ে থাকে। কোনো কিছু ভুল হয়ে যায় নাকি। বাবার বাড়িতে কেউ কিছু বলবে না এটা মেয়েটা নিশ্চিত থাকে বা শুধরে দেবে। শ্বশুর বাড়িতে একটু দ্বিধা থাকে। মনের মধ্যে ভয় কাজ করে। আবার ছেলেরা যখন শ্বশুর বাড়ি যায়, তখনো মেয়েটির মনে একটা ভয় কাজ করে। জামাই আদরে কোনো ভুল হয়নি তো?
ছেলেটি কিন্তু ভয়ে থাকে না। মনে মনে নিশ্চিত থাকে তার জামাই আদর বরাবর হবে।
\n\n
কয়েক বছর প্রেম করার পরও মেয়েটি তার প্রেমিক’কে বলে, আচ্ছা একচা ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি, কিছু মনে করোনা।\n
-ঠিক আছে বলো।\n
-তোমাদের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে কি চাওয়ার আছে? মানে কী দাবি আছে?\n
-চাওয়া, দাবি, ঠিক বুঝলাম না।\n
-আসলে আমাদের এদিকে যৌতুক প্রচলিত আছে। তোমার কোনো চাওয়া আছে নাকি?\n
-হ্যায় চাওয়া তো আছেই। সেটা হল তুমি। তুমি ছাড়া আমার এক টুকরো সূতারও দাবি নেই।\n
এটা নিছক কথোপকথন হতে পারে। সত্যিও হতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রেও একটি মেয়ে ভয়ে থাকে। না জানি কী দাবি থাকে আমাকে বিয়ে করার জন্য। না জানি আমার পরিবারের পরিশোধ করতে কষ্ট হয় নাকি।\n
ছেলের কিন্তু যৌতুকের ভয় নেই যে তাকে যৌতুক দিয়ে বিয়ে করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে মেয়েদের টাকা,গাড়ী, বাড়ি দিতে হয়, দেনমোহর হিসেবে। পুরুষ দাবি করে কোন কিছু চেয়ে নেয়া হারাম মনে করে।
\n
একটি ছেলে যেমন স্বপ্ন দেখে, তার একদিন একটি লক্ষ্মী বউ হবে। তেমনি একটি মেয়েও স্বপ্ন দেখে , এমন একজন তার স্বামী হবে যাকে নিয়ে সুঃখে দুঃখে সারাটি জীবন কাটাতে পারবে। হাতে গনা কিছু মেয়ে আছে খারাপ। খারাপ বললে ভুল হবে কারণ তারা এতটাই খারাপ যে সে খারাপের (া-আঁ-কার) নেই। তারা খরাপ। কিছু সংখ্যক খরাপের কারণে ছেলেরাও আজকাল ভয়ে থাকে, আমি কী লক্ষ্মী একটি বউ পাব? নাকি দজ্জাল বউ পাব যে আমার জীবনটাও নষ্ট ককরবে পরিবারেও অশান্তি আনবে এই হাতে গনা কিছু খরাপের জন্য বউ শ্বাশুড়ীর অমিল হয়। তারা চায় সংসারের চাবির গোছা থাকবে আঁচলের মাথায় গিট্টু দেয়া আর আচলের নিচে থাকবে স্বামী। তারা চাইবে স্বামীকে নিয়ে আলাদা থাকতে। হিন্দী সিরিয়াল নাটক দেখলে যা হয় আর কী।
\n
কিছু মেয়ে শত আঘাত সহ্য করেও শ্বশুর বাড়ি হাসিমুখে থাকে। বাবার বাড়ি গিয়ে বলে আমি সুখে আছি। কখনো দুঃখ কষ্ট বুঝতে দেয় না।
\n
“তাদের যেমন স্বপ্ন থাকে, বিয়ের পর একটা সুখের সংসার হবে। আবার ভয়ও থাকে, বিয়ের পর সুখী হবতো?

Post a Comment

0 Comments