গল্পের শূরু টা, গল্পের সোনালি সময় টা এবং ইতি টা না হয় অন্য একদিন বলব।
মোস্ট রিসেন্টলি লাস্ট মিটিং টা নিয়েই না হয় এই গ্রুপে আমার প্রথম লেখা টা লিখি।
লাস্ট মিট bangla love story | bangla golpo | bangla story | bangla romantic story |
জানুয়ারী ১৪, ২০১৯ সাল ।
ফেসবুক নিউজফিড স্ক্রলিং এর সময়ে একটা স্ট্যাটাস চোখে পড়ে, "Travelling Munsiganj to Gazipur" । স্ক্রল আপ করে একটু থেমে আইডি চেক করে দেখি এটা বিথির আইডি। সাথে সাথেই ইনবক্স করলাম।
সাধারণ খোজ খবর নেওয়ার পরে জিজ্ঞেস করি
-গাজিপুর কেন যাচ্ছো?
-ভার্সিটি এক্সামের জন্য যাচ্ছি ।
- ওহ। কোথায় আছো এখন ?
- মুক্তারপুর ব্রিজের উপর ।
- অহ! ফিরবে কবে ?
- ২-৩ দিন পরে, তোমার কি অবস্থা ?
- আলহামদুলিল্লাহ্। আচ্ছা, তুমি কি একাই যাচ্ছো ? নাকি সাথে কেউ আছে ?
(আসলে তাকে নক করার উদ্দেশ্য ছিল যেহেতু গাজিপুর আসছে, আমিও ঢাকায় আছি, দেখা করা যায় যদি আর কি )
- নাহ, আমি একা না। সাথে আরেকজন আছে।
- কে ?
- এইতো আমি আর রিয়া ।
- তুমি আর রিয়া ?
- হুম।
বেশ কিছুক্ষণ সময় পার হয়ে যাবার পরে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করি, আচ্ছা আমার সাথে দেখা করতে পারবে ? যদি সম্ভব হয় ?
উত্তরে বিথি নানান কথা বার্তা বলে ফাইনালি রাজি হয় , তবে একটা শর্তে যে, রিয়া কে জানানো যাবে না । রিয়া কে না জানিয়ে দেখা করবে ।
তো ডেট ফিক্সড হলো, ১৫ জানুয়ারি মানে পরেরদিন দেখা হবে, সকাল বেলা যখন ও কলেজ এ যাবে তখন। টুঙ্গি সরকারি কলেজে।
...
তার সাথে আমার এই কথা গুলো হয় সকাল বেলা । সবকিছু ঠিকঠাক করা হলেও আমার মনের ভিতরে আসলে ঠিকঠাক যাচ্ছিলনা । আসলে তার সাথে দেখা করাটার ইচ্ছেটাও ব্যপক ভাবে তাড়া করছে আমাকে, আবার নিজে নিজে চিন্তা করছি গত ২ বছর তাকে দেখি নি এক নজরেও, এখন অবদি এক মুহূর্তের জন্যেও ভুলতে পারি নি। আবার কালকে দেখা করার পরে আগামি সময় গুলো যে কেমন যাবে !! এসব নিয়ে আসলে দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম খুব ।সিগেরেটের মাত্রাটাও ভালো আকারে বেড়ে গেছে । বিকেলের দিকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে ফোনে কথা বলে সিদ্ধান্ত কনফার্ম করি যে যাবই না। আসলে তাকে দেখার পরে আমার আর ভাল থাকা হবে না।
অফিস শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম। ফেরার পথে ফেসবুকে গিয়ে দেখি বিথি একটিভ নেই। পরে সাহস করে ফোন দেই যে আসলে যাওয়া হবে না কথা টা জানানোর জন্য ।কিন্ত ফোন করে আবার সিদ্ধান্ত চেঞ্জ হয়ে গেল।
নাহ, আমাকে যেতেই হবে। ২ বছর তার ঐ মায়াবি চেহারা টা দেখি না।
।
যাই হোক, ১০ টার দিকে তার সাথে কথা শেষ করে বাসায় এসে আর ঘুমাতে পারি না। জানতাম যে আজকে রাতে ঘুম হবে না, তাই এক প্যাকেট সিগেরেট আগেই নিয়ে বাসায় ঢুকি। রুমের পাশে বেলকুনিতে বসে ল্যাপটপ টা কোলে নিয়ে সিক্রেট/লকড/হিডেন করে রাখা সব ফাইল বের করে করে এক এক করে ফেলে আসা সময়ের স্মৃতি গুলো দেখি। প্রথম মিট এর পিকচার, ওর পিকচার , অনেক কনভার্সন এর স্ক্রিনশট সহ অনেক স্মৃতিমাখা বস্ত গুলোও বের করে দেখি আর কি ।
এসব করতে করতে ফজর আজান দিয়ে দিল। ফ্রেন্ড কে ফোন করে ডেকে তুলে সূর্য উদয়ের আগেই বের হলাম টুঙ্গির উদ্দ্যেশ্যে। ১০ টার আগেই যেতে হবে। কত ভয় মনে! উত্তরা টুঙ্গির রাস্তায় কত্ত য্যাম ! কতক্ষণ যে লাগবে! এসব আরো কত টেনশন।
।
৯ টা বাজে টুঙ্গি পৌছালাম। সরকারী কলেজের গেটের সামনে গিয়ে ফোন দিলাম । আসতেছি আসতেছি বলতে বলতেও দের ঘন্টা ওয়েট করার পরে ফোন দিয়ে বিথি বলল, কই তুমি?
- এইত গেটের কাছাকাছি।
-ওখানে কি করো ? ক্যাম্পাসের ভিতরে আসো /
-আচ্ছা দাড়াও আসতেছি।
(ফোনে কথা বলতে বলতে এক পা দু পা করে আগাচ্ছি আর আমার হার্ট বিট বেড়েই চলেছে, হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে, হাতের তালুটা প্রচুর ঘামতেছে, প্রচন্ড রকমের নার্ভাস ফিল করতেছি। এটা নতুন না যদিও, তার সাথে রিলেশন থাকা অবস্থায় ১৬ বার দেখা হয়, যেখানে প্রত্যেকবারেই আমার এরকম হয়েছে ।)
গেটের সামনে কালো বোরকা পরে বিথি দাঁড়িয়ে আছে আর আমাকে হাত দিয়ে ইশারা করে বলছে এদিকে আসো। কাছে গেলাম ।
বিথি বলল- কেমন আছো ?
- এইত আছি...
- হাহাহা এতদিন তুমি লেট করতে দেখা করার সময় , এখন আমরা করলাম, দেখো কেমন লাগে ।
- আমি মৃদু হাসার ব্যর্থ চেষ্টায় চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক করে খুজি।
- কি খোজো ? চলো ক্যাম্পাসের ভিতরে যাই,
(অনেক ছেলে-মেয়ে বসে আছে বেঞ্চে লম্বা সারি বেধে ।)
আমি বিথি আর আমার ফ্রেন্ড হেটে চলছি,...
বিথি বলছে, আচ্ছা সিয়াম এখন বলতো রিয়া কোথায় ? খুজে বের করো তুমি।
আসলে বিথির মুখ থেকে এই কথা টা বের হবার আগেই আমি আমার সেই চেনা ২ টা চোখ দেখে ফেলেছিলাম ।
বোরখা পড়ে মুখ টা ঢেকে সেই পুরোনো বেশেই রিয়া এসেছে আজকেও। চোখ ২ টা শুধু বের হয়ে আছে ।
বিথি একে কে অনেক কথাই বলে যাচ্ছে, কিন্ত আমার কানে আর কথা ঢোকে না । আমার চোখ মন সব কিছুই যেন ঐ ২ টা চোখের মাঝে ডুবে গেছে। আমি রিয়ার ঐ মায়াবি চোখ থেকে চোখ সরাতে পারি না। যদিও সে আমার দিকে মাঝে মাঝে তাকিয়েছিল ।
হাটতে হাটতে কাছে গিয়ে দাড়ালাম। আমি তাকে শুধু দেখেই যাচ্ছি, সে মোবাইল টেপার ধান্দায় আছে, বা বিথির পিচ্ছি ভাগ্নের জামা ঠিক করছে মানে একটা কিছু করে ব্যস্ত থাকার মিথ্যে চেষটা করছে।
আমি দাড়িয়েই আছি। আমার বন্ধু বিথি রিয়া পরিচিত হলো, ওরা কথা বলছে হাসছে , কিন্ত আমার কেন যানি চারিদিকের কিছুই মাথায় ঢুকছে না রিয়া কে ছাড়া। তার সাথে দেখা করার আগে কত কথা মনে জমিয়ে রেখেছিলাম যে তাকে বলব ?
সব যেন হাড়িয়ে গেল । আমার একটা কথার উত্তর জানার খুব দরকার ছিল যে, কেন ? কেন ? কেন সে আমাকে ছেড়ে গেল ?
সে কি ভালো আছে ?
সে কি আমার মত কষ্ট পায় ?
সে কি কারণে আমাকে এত কষ্ট দিল ?
সে কিভাবে থাকে ?
সে কিভাবে এত স্মৃতি ভুলে গেল ?
ব্রেক আপের আসল কারণটা কি ছিল ?
এরকম জাতীয় হাজার প্রশ্ন আমার মনে গত ২ বছর ধরে চলছিল আর আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছিল। যদিও একবার সে আমাকে উত্তর দিয়েছিল যে কেন আমাকে ছেড়ে গেছ। উত্তর টা ছিল,
আমি তাকে সময় দিই না, আমার ব্যবহার খারাপ, আমি শুধু কষ্ট দিয়েছি, আমার মুখের ভাষা খারাপ, আমার সাথে সে সুখে থাকতে পারবে না, আমার সাথে তার যায় না, আমি তাকে বকা ঝকা করি ।
আসলে তার বলা কারণ গুলোর একটাও আমাদের রিলেশন ব্রেকাপের কারণ ছিল না । আসলে ব্রেকাপ ত আমি আজও করি নি। সে ই হঠাত করে যোগাযোগ অফ করে দিয়ে সুনির্দিষ্ট একটা প্ল্যান করে আমার লাইফ থেকে সরে গেছে । যাই হোক।
তার সাথে আমার লাস্ট দেখা হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ । আর সেইদিন ১৫ জানুয়ারী ২০১৯ । মানে প্রায় ২ বছর পরে তাকে দেখলাম।
আগের থেকে অনেক ম্যাচুরড লাগছে, সুন্দর হয়েছে ভারী। অনেক চেঞ্জ আসছে কথা বার্তায় ।
প্রায় ঘন্টা খানেক পার হয়ে গেল। আমার ফ্রেন্ড বিথি ফোরস করছে আমাকে যে আমি কিছু বলি না কেন। ঘন্টা অতিবাহিত হবার পরেও আমার মুখ থেকে কেন যানি আওয়াজ বের হতে চাচ্ছিল না। এদিকে বিথির এক্সাম শুরু হবে, সে চলে গেল। আমরা ৩ জন । প্রায় দের ঘন্টা পরে ফ্রেন্ড কে ইশারা করি ও বাহানা দিয়ে বাইরে চলে যায় ।
রিয়া জিজ্ঞেস করল ,
কেমন আছেন ? (আমাকে এখন সে আপনি সম্ভোধন করে)
- হুম ভালো ।
- তো তারপর কি অবস্থা আপনার ? এরকম আসার পর থেকেই তো অপপ করে আছেন, কোনো কথাই বলছেন না ।
- হুম বলছিই তো ।
- কি চশমা পড়ছেন ? পাওয়ার আছে?
- না, এমনিতেই পরি, লম্বা সময় পিসি নিয়ে থাকি তো, চোখের সেফটি হিসেবে আরকি।
- হুম ভালো । এরকম দেবদাস ভাব ধরছেন ক্যান ? চুল দাঁড়ি কাটেন না ক্যান ? পাগলের ভ্যাস ।
- এমনিতেই, ভাল্লাগে।
- নাকি ফ্যাসান ? আজকাল এইটা তো ফ্যাসান ।
- হয়ত ।
- কি শুরু দিছেন ? এরকম হা হু, অপ, আগে তো খুব কথা বলতেন, সারাদিন আমারে বকতেন, গাইলাইতেন তখন এত কথা কেমনে কইছেন?
- হুম
যাই হোক এরকম কিছুক্ষন যাওয়ার পরে প্রথম আমার মুখ থেকে তাকে জিজ্ঞেস/প্রশ্ন যাই বলি না কেন , প্রথম কথা টি বলার নিয়াত করে ওর পাশে বসলাম,
-আচ্ছা রিয়া, কেন ? আসলে ব্রেক আপের মুল কারণ টা কি ছিল ? আমাকে একটু বলবা প্লিজ ? আমি সত্যিই এখন ও কারণ খুজে পাই নি গত ২ বছরে। অন্তত একটা কারণ থাকলে না হয় তোমাকে ভুলে যেতে পারতাম এই কারণ টা কে আকরে ধরে । আসলে কেন ? আসল কারণ টা কি ?
- কেন আপনি যানেন না ? আপনার ব্যবহার, কথা বার্তা এগুলা আমার অসহ্য লাগত । আসলে আপনি আমাকে ভালইবাসেন নি ।
- এইটা মূল কারণ হতে পারে না। যখব তুমি আমার সাথে যোগাযোগ অফ করেছিলে, তখন তোমার সাথে আমার সম্পর্ক যথেষ্ট ভ্ল ছিল। ঝগ্রাও ছিল না, কোন ঝামেলাও ছিল না। হঠাত করে একদিন তুমি আমাকে বললে দুলাভাই সব জেনে গেছে, আমাকে কল দিও না, আমাকে মারধর করছে। আমি সময় পেলে কল দিব । তুমি চিন্তা করো না, আমি তোমারই আছি।
আমি কল দিতাম না যে তোমার সমস্যা হবে। যে তোমার সাথে আমার ২ বছর রিলেশন এ টানা ২৪ ঘন্টা কথা না হয়ে থাকতে পেরেছি, সেই তুমি আমার সাথে প্রায় ১ মাস কথা না বলে একদিন তোমার বান্ধবীর নাম্বার থেকে আমাকে কল করে আমাকে শান্তনা দিলে। ইমো তে কল দিলাম তোমাকে দেখার জন্য, দেখলাম, আমি কেদে যাচ্ছিলাম এই ভেবে যে এই বুঝি তোমাকেই হাড়িয়েই ফেললাম। তুমিও কেদেছিলে, আর আমাকে বলেছিলে, চিন্তা করো না আমি তোমারই আছি। আমার কেয়ার করলে, খবর নিলে। তারপর সেই যে অফ করলে যোগাযোগ , ১-২-৩ মাস চলে যায় আর কল দিলে না। আমি এর মাঝে সাহস করে তোমার বান্দবীদের কাছে তোমার খবর জানতে চেয়েছি তারাও কিছু জানায় নি। বাধ্য হয়ে তোমার ফোনে কল দিয়ে দেখি সুইচ অফ ! অফ তো অফ ই। দিনে কত বার যে কল করতাম ! শেষ ।
আর পেলাম না তোমায়। হাড়িয়েই গেলে। আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে তোমার এলাকায় যেতে ৬-৭ ঘন্টা লাগে ট্রেন জার্নি। তার পর তোমার বাসাও চিনি না, চিনলে হয়ত চলে যেতাম। শেষ মেস আমাকে ভুলে হাড়িয়েই গেলে । কেন রিয়া ? আসলে কি দোষ ছিল আমার ? আসল কারণ টা কি ?
{একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছি, রিয়া এখন অন্যের স্ত্রী, ২০১৮ তে বিয়ে হয়েছে। লাভ ম্যারেজ , যদিও তাদের এখনো দেখা হয় নি একে অন্যের সাথে। ভিডিও কনফারেন্স এ নাকি বিয়ে হয়েছে। ইতালি থাকে তার হাসবেন্ড }
আমি রিয়া কে বললাম, আচ্ছা এতকিছু বাদ, আকরাম মানে তোমার স্বামী যে, তার সাথে পরিচয় কিভাবে ? কবে থেকে কথা হয় ? কবে রিলেশন হয় ?
- আপনার সাথে যখন আমার যোগাযোগ অফ হয়, আপনার ব্যবহারে যখন আমি অতিষ্ট, আমাকে শুধু কষ্ট দিতেন , তখন আমি ফেসবুকে সময় কাটাতাম অন্য আইডি থেকে। "মাইরালা" গ্রুপ থেকে তার সাথে পরিচয়, তারপর তার সাথে অনেক কথা বার্তা শেয়ার, আপনার সম্পর্কে শেয়ার করেছি, সে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে, এভাবে......
- এভাবে আগাতে আগাতে এক সময় হাই আপু বলে ডাক দেওয়া অপরিচিত লোকটা তোমার বয়ফ্রেন্ড হয়ে যায় ??? আসলে রিয়া তোমার সাথে আমার ব্রেকাপের মুল কারণ টা তুমি কোনো দিনও স্বীকার করবে না, কারণ আমার সাথে রিলেশন থাকা অবস্তায় তুমি আকরামের সাথে সম্পর্কে জরাও। তারপর প্ল্যান করে তার বুদ্ধিতে আমার জীবন থেকে চলে যাও সুখের খোজে
- না জীবনেও না (চিতকার করে) । আপনার সাথে ব্রেকাপের অনেক পরে তার সাথে আমার রিলেশন হয়...
- শোনো শোনো, আসলে তোমাকে দোষ দিয়ে কি লাভ ! তোমার যায়গায় তোমার সিদ্ধান্ত বেটার ছিল। আমার মত ছেলের যার কি না ফিউচার নাই, কি করে খাবে , কিভাবে চালাবে এসব ভেবে তোমার নেওয়া সিদ্দান্ত তা আসলেই ঠিক ছিল । তারপর আসলে তোমাকে সময় দিতে পারতাম না। সারা রাত জেগে কম্পিউটার কে সময় দিসি, দিনের বেলা ঘুমাইছি (আসলে আমি ফ্রিল্যান্সিং করতাম তখন, এখনো করি ) তুমি ঠিক ছিলে ।
- জি না। আসলে আপনার সাথে আমার যায় না। আপনি শহরে থাকতে পারবেন না। গ্রামে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি কাজ করতে পারব না, আমার অসুস্থতার কথা আপনি যানেন।
এই টাইপের অনেক কথা বলছিল রিয়া ।
(রিয়ার ব্রেস্ট টিউমার ছিল, অপারেশন হয় ২০১৬ তে । যেটা নাকি এখনো ঠিক হয় নি । )
আসলে এই রকম কথা বার্তা রিয়া এর আগে কখনো বলে নি, কারণ ও লুভি না , সেটা আমি দেখেছি যতটা ২ বছরে। তার অরথের প্রতি লোভ ছিল না । কিন্ত আজকে কেন সে এসব কথা বলল ! হয়ত আমি যাতে তাকে ভুলে যেতে পারি, এজন্য শুনিয়েছে।
আসলে আমাদের গল্পের ভিলেন টা রিয়ার বোন ছিল, সে চাইত না আমাদের এক সাথে থাকা ।
আমি মুসলিম হিসেবে তাবিজ কবজ, জিন চালান, কালো জাদু বিশ্বাস করি । রিয়া আমাকে রিলেশন থাকা অবস্থায় বলত যে ওর বোন ওকে নিয়ে নাকি ঐসব কাজ যারা করেন সেখানে নিয়ে যান। কারণ টা ছিল রিয়ার ব্রেস্ট ট্রিট্মেন্ট এর উছিলা করে ।
আসলে আমি আজও কনফিউসড যে, এটা কি ব্ল্যাকম্যাজিক করে আমার থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে? নাকি রিয়া ইচ্ছা করেই ? ইচ্ছা করে কেন যাবে ? যে তো লোভী ছিল না ! আসলে কারণ টা কি ! সত্যিই আমি এটা ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত ।
যাই হোক, কথা শুরু হলে আসলে শেষ হতে চায় না। আসলে সেইদিন রিয়া যথেষ্ট রকমের উচ্চ স্বরে আমাকে ধ্মকাচ্ছিল, সাচ লাইক আমি বড় মাপের অপরাধী । ক্যাম্পাসের অনেকেই আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, রিয়া আঙ্গুল ঝাকিয়ে অনেক কথা শুনিয়েছে । আমি আসলে কানে নিই নি, কারণ আমি তাকে দেখে যাচ্চিলাম। হয়ত এটাই শেষ দেখা।
আমি বেশি কথা বলতে পারি নি। আসলেই বলতে পারি নি । চুপচাপ ই ছিলাম, আর তার চোখে তাকিয়েছিলাম অপলক ভাবে। আর হ্যা রিয়ে কে ফাইনালি দেখতে পেরেছিলাম, প্রায় ২-৩ ঘন্টা পরে মুখোশ তা সরিয়েছিল কিছু সময়ের জন্য অনেক রিকুয়েস্টের পরে।
লম্বা একটা সময় পার করে বিকেলে গড়িয়েছিল। তার সাথে দেখা হওয়ার ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারীর বাসের,ট্রেনের টিকেট, পারকের টিকেট সেদিনও আমার মানিব্যাগের পকেটে ছিল। রিয়া ছিড়ে ডাসটবিন এ ফেলে দিছে অবশ্য । আমি এখনো তার হাতে বানানো রুমাল টা ইউজ করি। এখনো তার দেওয়া ডায়েরি টা দেখি ।
আগে যখন দেখা করতাম, প্রতিবার মনে হত এই বুঝি শেষ দেখা, রিয়ার সি এন জি, বা রিক্সা অনেক দূর চলে যাওয়ার পরেও তাকিয়ে থেকে আবার দৌরে দিয়ে তাকে জরিয়ে ধরেছি। এরকম অনেকবার হয়েছে।
বিথি আর রিয়া কে রিক্সায় তুলে দেওয়ার সময় আমার শেষ কথা টা ছিল সেদিন ,
"রিয়া, তুমি নিজেই মিলিয়ে নিও, আমার থেকে বেশি তোমায় আর কে ভালোবাসতে পারে ।"
আসলে অইদিন খুব করে ইচ্ছে করছিল রিয়ে কে জরিয়ে ধরে কাদতে। আমি কেদেছিলাম,কিন্ত আওয়াজ করতে পারি নি। মাঝে মাঝে মুখ ঘুরিয়ে চোখের কোনে আসা পানি মুছেছি। খুব করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিল, রিয়া তুমি ফিরে এসো, আমি আজও তোমার অপেক্ষায় থাকি ।
আমি তোমাকে এখনো আগের মতই অনুভব করি, আগের থেকে ভালোবাসা টা একটুও কমেনি, আরো বেড়েছে। খুব বেশী পরিমাণে তোমাকে মিস করি রিয়া । 🙁
খুব বেশি মনে পরে, অনেক ভালোবাসি তোমায় রিয়া । হয়ত তোমার মাঝে এখন যে রিয়ার জন্ম হয়েছে তাকে আমি ঘৃনা করলেও, ২০১৫-২০১৭ এর রিয়া কে আমি স্টিল ভালোবাসি, এবং সারাজীবন দূর থেকেই বেশে যাবো।
আর দোয়া করি সবসময় আল্লাহ্ যেন তোমাকে খুব দ্রুত সুস্থতা দান করেন ।
[আসলে রিয়ার সাথে রিলেশন শুরু থেকে রিলেশন এর ফুল সময় টা ছিল আমার জীবনের সেরা সময়ের মুহূর্ত। অনেস্টলি বলছি, রিয়ার মত করে আমাকে কেউ ভালবাসতে পারে নি (মা -বাবার ভালোবাসার সাথে তুলনা করে কেউ বোকামি করবেন না প্লিজ) অনেক বেশি ভালোবেসেছে সে, হয়ত এই জন্যই আমি তাকে আজও ভুলতে পারি না । হয়ত সময় করে একদিন আমাদের ভালোবাসার শুরু ও শেষ টা লিখব । ]
0 Comments