ছোটবেলার অভিমান bangla golpo| coto belar oviman | Bangla story | bangla love story

ছোটবেলার অভিমান  (coto belar oviman) আমি একবার ক্লাস রুমের মধ্যে একা একা বসে আছি। আমার আবার গল্পের বই পড়তে ভালো লাগে। তাই চুপচাপ বসে মনে মনে গল্প পড়ছিলাম। তখনই আমার কাধে একটা হাত পড়ল,পিছনে তাকিয়ে দেখি ফারহানা…
ছোটবেলার অভিমান bangla golpo| coto belar oviman | Bangla story | bangla love story 
..কিরে সারাদিন তো দেখি শুধু গল্পই পড়িস..বাড়ি যাবি না?? চল বাড়ি যাই..
\n\n
আমি:দাড়াও আমি এখনই আসছি..\n
ও সরি ভুলেই গেছি আমি তাহসান …আমার নাম আসলে ওমর ফারুক\n
আর ফারহানা হলো আমার কাজিন..পরিবারে আমরাই দুই ভাই বোন..তবে ফারহানা আমার চেয়ে বেশী বড় না..আমার থেকে দুই বছরের বড়…যাই হোক আমরা রাস্তা দিয়ে হেটে চলছি.. গ্রামের পথ অনেক টা চাপানো..তাই দুজনে পাশাপাশি যাচ্ছি..তখন..
..কিরে তোর কি হইছে বলতো?\n
কার?\n
কার আবার তোর।\n
না.. কিছু নাতো..\n
তাহলে ক্লাসে একা একা বসে থাকিস কেন? তোকে কখনো কারো সাথে মিশতে দেখি না আজকাল..আসলে তোর হয়েছে কি??বলতো??\n
না..আপু কই কিছুই তো হয় নাই..আসলে শরীরটা ভালো লাগছিল না..তাই বসে ছিলাম.\n
ওওও.. আচ্ছা..আমি ভাবলাম কি না কি…\n
সেরকম কিছুই না .. আচ্ছা আপু তুমি কি ফারাবি ভাইকে চেন..\n
কেন আবার ওর কথা বলছিস কেন..\n
না এমনি তোমার বন্ধু হয় বুজি..\n
হুম মমম(মিষ্টি হেসে)
\n\n
এতক্ষণে বাড়িতে এসেছি..ব্যাগটা ফেলেই সোজা পুকুর পাড়ে গেলাম..মন খারাপ করে বসে আছি..কান্নাও পাচ্ছে..যে মেয়েটা সারাদিন আমার সাথে ঝগড়া করে কাটায়..যার সাথে কতই না দুষ্টুমি করেছি..আজ সেই আমার সামনে অন্যের সাথে সময় কাটায়..তাদেরকে একসাথে দেখলে মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়..
\n\n
এসব ভাবতে ভাবতেই আমার চোখের পাতা এক হয়ে গেল..আসলে আমি পুকুর পাড়ে তেমন আসি না..ঘুম থেকে উঠে দেখি সন্ধ্যা এখন.. তাড়াতাড়ি উঠে বাড়ির দিকে দিলাম দৌড়.. বাড়িতে ডুকে দেখি মা বাবা চাচা চাচি সবাই আমাদের বাড়িতে বসে আছে ..সবার মুখে চিন্তার ছাপ..ভয়ে ভয়ে মা বলে ডাক দিলাম..বাব অগ্নি চোখে আমার দিকে চেয়ে বললেন..
কোথায় ছিলি??
\n\n
বাবা..ইয়ে মানে …ইয়ে করতে না করতেই.ঠাআআসস.ঠাআআআস..দুটো থাপ্পড়..তাও আবার বিনামূল্যে.. কোনো রকম মন ভার করে ঘরে গিয়ে শুয়ে থেকে কাদছিলাম.. তখনই ফারহানা এসে বলল..
কোথায় ছিলি?? জানিস সবাই কি রকম চিন্তা করছিলাম তোর জন্য..পুরো গ্রামে গরু খোজার মতো খুজেছে তোকে.আজ তোর যদি কোনো কিছু হয়ে যেত.. আমার তাহলে কি হতো..(কাদো কাদো সুরে)
কি আর হবে ফারাবি কে বিয়ে করে সুখে থাকবে(রাগি কন্ঠে)
মানে তুই কি বলতে চাচ্ছিস.. পরিষ্কার করে বল..

আমি : মানে আবার কি এতোদিন তুমার সাথে ঝগড়া করেছি আমি… আমাকে তুমার একদম সহ্য হয় না …তাইতো .. ঠিক আছে..আর কোনো দিন তোমার সাথে ঝগড়া করব না..কোনোদিন কথাও বলবো না( কদো কাদো রাগি সুরে)
আপু একদম থ মেরে গেল..কোনো কথা না বলে চলে গেল ..আমিও মনের কষ্টে ঘুমিয়ে পড়লাম..কেউ খেতে ডাকলো না আমায়.. সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি.. আপু সামনে দাঁড়িয়ে..
যা.. তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আয়..\n
কেন.. তুমি তো আমার সাথে কথা বলবা না.. তাহলে এখন এখানে কি করছো..
চুপ চাপ রেডি হয়ে আয়.. নাহলে তোর একদিন কি আমার একদিন…\n
একটু ভয় পেলাম আপুর যে শক্তি .. আমাকে একটা মারলে আর আমাকে খুঁজে পাওয়া যাবে না.. তাই বাধ্য হয়ে রেডি হলাম ..দেখলাম টেবিলে খাবার সাজানো আছে..
চল.. দ্রুত খাবার খেয়ে নি..\n
খুব ক্ষুধা লাগছিল তাই কোনো কথা না বলে খেতে শুরু করলাম ..খাবার শেষে ..\n
চল..আমার সাথে..\n
কোথায় যাবো..আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো …\n
ওমাআআ..একি এটা তো ফারাবি ..ও এখানে কি করছে..\n
চল..ভাইয়া এই হলো তাহসান…\n
হায় .. তাহসান..কেমন আছো??\n
আমি অবাক হয়ে বললাম ..জি ভালো..আপনি কেমন আছেন??\n
হুম আমি ভালো আছি… তোমাদের গ্রামটা অনেক সুন্দর..এখানে না আসলে বুজতেই পারতাম না যে আমাদের দেশে এত সুন্দর জায়গা আছে…
এই বলে তিনি রুমে চলে গেলেন..
\n\n
আমি ফারহানা কে জিজ্ঞেস করলাম.. ব্যাপার কি..মানে কিছুই বুজলাম না ..খুলে বলো..\n
আসলে ফারাবি হলল আমার মায়ের দুর সম্পর্কের ভাতিজা… ঢাকায় থাকেন.. পড়াশুনা শেষ তাই গ্রামের স্কুলে এসেছিলেন পরিদর্শন করতে.. তখনই আমাদের সাথে পরিচয়..সেই দিন আমি তাকে আমাদের গ্রাম ঘুড়িয়ে দেখিয়েছিলাম…
আর তুই কি না কি ভাবলি( একটু মন খারাপ করে)
\n\n
আমার তখন নিজের উপর রাগ হলো..ধ্যাত শুধু শুধু মন খারাপ করে আছিলাম..\n
আপু আমাকে বলল..আমি জানি তুই আমাকে কোনো ছেলের সাথে ঘুরতে দেখতে পারিস না..তাই ভাইয়াকে বলে একটু তোর রাগ তুলতে চেয়েছিলাম.. কিন্তু তুই বাড়ি থেকে এভাবে চলে যাবি..আমি এটা কখনই ভাবতে পারি নি..
আমি একটু অবাক হয়ে বললাম..চলে যাবো মানে…কোথায় যাবো???\n
আপু: মানে তুই তখন কোথায় গিয়েছিলি..\n
আমি: আমি তো পুকুরপাড়ে ঘুমিয়ে পড়েিলাম..তাই আসতে দেরি হয়েছিল…\n
আপু: কিইইইইইইইইই… তুই আরামে ঘুমাই ছিলি ..আর আমারা….\n
শয়তান দাড়া তোর মজা দেখাচ্ছি…
\n\n
তখন থেকে আবারও আমাদের মিষ্টি ভালোবাসার ঝগড়া শুরু হলো…আপুর বিয়ের সময় আমি একটু বড় হয়েছিলাম.. তাই তেমন কোনো কষ্ট পায়নি.. কিন্তু আমি কেঁদেছি শুধু আপুর কান্না দেখে..
এখন আমার আর আপুর মাঝে কোনো ঝগড়া হয় না.. মাঝেমধ্যে আমাদের সেই পুরনো ‌‌কথাগুলো মনে পরে ..যা আর কোনোদিন ফিরে পাবো না…

Post a Comment

0 Comments