পাগল ছেলে Vs পাগলি মেয়েটা অনেকদিন থেকেই ভাবতেছিলাম প্রেমিকার সাথে একটা বিসনেজ করবো। আজকে দুইজন মিলে সেইটার উদ্বোধন করলাম।প্রথম দিনেই ৩৭৫ টাকা ইনকাম হইছে।
\n
প্রথমদিকে অবশ্য ও রাজি হয়নাই। বলে, এসব করতে নাকি ওর লজ্জা লাগবে। পরিচিত কেউ দেখলে কি বলবে! পরে অনেক বুঝাইয়া ওকে রাজী করানো গেছে। বেকার ছেলেমেয়েরা প্রেম করবে বাপের টাকা দিয়ে আর আমরা প্রেম করবো নিজের টাকা দিয়ে। এইসব অনেক যুক্তি দেখানোর পর ও রাজি হইলো।
\n
এই বিজনেসে অবশ্য তেমন ইনভেস্ট করতে হয়নাই। দুইজন মিলে ১২০০ টাকা দিয়ে একটা ওজন মাপার যন্ত্র কিনেছি। তারপর সেই যন্ত্র ব্যাগের মধ্যে করে নিয়ে গিয়ে রমনা পার্কে বসেছিলাম। সামনে শুধু একটা বিজ্ঞাপন লিখে দিয়েছিলাম “এইখানে ওজন মাপা হয়”। আর কিচ্ছু করা লাগে নাই।
\n
দুইজন মিলে ৫০ টাকার মতো বাদাম কিনে খাইছি আর গল্প করছি।
\n
সাদিয়া?
\n
-কও।
\n
বাকি ৩২৫ টাকা দিয়ে কি করবা?
\n
– তুমি কি করবা সেইটা কও?
\n
আমারে দুইটা সিগারেট কিনে দিলেই হবে
আর কিছু লাগবে না।
\n
-তুমি না সেইদিন কথা দিছ সিগারেট খাইবা না?
\n
আচ্ছা তাইলে চলো দুইজন মিলে চা খাই।
\n
-শুধু চা খাইবা? সাথে বিস্কুট খাবা না?
\n
হ্যাঁ খাবো।
\n
-তাও তো ৩০০ টাকার মতো থাকবে। ঐটা দিয়ে কি করবা?
\n
টিএসসিতে যাবা?
\n
-ঐখানে কেন?.
\n
ঐখানে অনেক চুড়ি পাওয়া যায়। আজ তোমাকে চুড়ি কিনে দিবো।
\n
– সত্যি?
\n
হ্যাঁ, সত্যি।
\n
সাদিয়াকে লাল, নীল সবুজ চুড়ি কিনে দেওয়ার পর এখানো ২০০ টাকার মতো আছে।
\n
সাদিয়া?
\n
-কও।
\n
আরো ২০০ টাকা আছে কি করবা?
\n
-চলো নীলক্ষেত যাই।
\n
ওইখানে কেন?
\n
-পুরাতন বই কিনবো।
\n
চলো…
\n
-রিফাত?
\n
কও।
\n
-কাল কোথায় বসবা?
\n
তুমি না কইছিলা এই ব্যবসা করতে তোমার লজ্জা লাগবে। তাহলে কাল বসতে চাও কেন?
\n
-তোমাকে যেটা কইছি সেইটার উত্তর দেও।
\n
কাল সোহরাওয়ার্দী বসি?
\n
-ঠিক আছে।
\n
সাদিয়া,যন্ত্রটা দেও আমি নিয়ে যাই?
\n
– না, এইটা আমার কাছে থাকবে। আর এই বইটা নেও তোমার জন্য নিছি। বইয়ের মধ্যে একটা জিনিস আছে। খবরদার আগেই খুলবা না। আমি হোস্টেলে ঢুকার পর খুলবা। ওকে?
\n
আচ্ছা ঠিক আছে।
\n
সাদিয়াকে ইডেনের হোস্টেলে দিয়ে মেসে এসে বইটা খুললাম। ভিতরে একটা সিগারেট। পাশে ছোট্ট করে লিখা। মাসে একটা করে খাওয়ার অনুমতি দিলাম।
মনের আনন্দে যেই না সিগারেট ধরাইছি এর মধ্যে আম্মার ফোন।
আম্মা- হ্যালো, শুনলাম তুই নাকি সিগারেট খাওয়া শুরু করছিস?
\n
আমি- কে কইছে এই কথা?
\n
আম্মা- ইনবক্সে ছবি দে ঠোঁটের। খবরদার এডিট দিবি না। নাইলে তোর আব্বার নাম ভুলাইয়া দিমু।
\n
আমিঃ ছবি পাঠায় দিলাম।
\n
আম্মাঃ লিপস্টিক পাইলি কই?
\n
আমি ঃ আম্মা, আমি লিপস্টিক দেই নাই।
\n
আম্মাঃ ঐ হারামজাদা তুই কি মনে করিস আমি শাকিব খানের মুভি দেখিনা? কোনটা লিপস্টিক আর কোনটা এডিট সব বুঝি। সত্যি কইরা বল লিপস্টিক কই পাইছস?
\n
আমিঃ আম্মা সাদিয়ার জন্য কিনছিলাম। ঐডা থেকে একটু ব্যবহার করলাম।
\n
আম্মাঃ আমার জন্য একটা কিনিস। কালারডা পছন্দ হইছে।
\n
আমিঃ আম্মা আমার কাছে টাকা নাই।
\n
আম্মাঃ তোর আব্বার কাছে বিচার দিমু যে তুই সিগারেট খাস?
\n
আমিঃ আপন লোককে বিশ্বাস করলে যা হয়। আচ্ছা দিমুনে কিনে। সামনে মাসে টিউশনির টাকা পাই আগে।
\n
আম্মাঃ সিগারেট খাওয়া ছাইড়া মানুষ হ। আর যেন না শুনি। আর সামনে সপ্তাহে বাড়ি আসিস। নতুন ধানের চাল করছি। আপনার আব্বা তো আপনাকে ছাড়া নতুন চাল খাবে না।
\n
আমিঃ আচ্ছা যামুনে। এবার রাখেন।
\n
আম্মার ফোন রেখে সাদিয়ারে ফোন দিলাম। হ্যালো শুনতেছ?
\n
-হ্যাঁ কও?\n
কালকের টাকা দিয়ে আম্মার জন্য লিপস্টিক নিমু। নাহলে খবর আছে।
\n
-কেন কি হইছে?
\n
কোন শালা যেন আম্মারে কইছে আমি সিগারেট খাই।
\n
– তুমি আমারে শালা কইলা কেন?
\n
তারমানে তুমি আম্মারে কইছ আমি সিগারেট খাই?
\n
-হ কইছি।
\n
আল্লাহ তোমার কাছে বিচার দিলাম। এমন প্রেমিকা যেন কারো না হয়।
0 Comments